তাড়িতচৌম্বক বিকিরণের দুটো প্রকৃতি তরঙ্গ প্রকৃতি ও কণা প্রকৃতি। তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ তরঙ্গ আকারে সঞ্চালিত হয় ধরে নিলে তার প্রতিফলন, প্রতিসরণ, অপবর্তন ও ব্যতিচার ধর্ম সম্পর্কিত পরীক্ষাসমূহ ব্যাখ্যা করা যায়। ফটোইলেকট্রিক ক্রিয়া ও কম্পটন প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করতে হলে ধরে নিতে হয় যে, আলো কণারূপী ফোটনের সমষ্টি এবং প্রতি ফোটনের শক্তি E ও ভরবেগ । কণারূপী ফোটনকে এর কম্পাঙ্ক f এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য দ্বারা যথার্থভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে।
প্রকৃতি নিজেকে বস্তু এবং বিকিরণ হিসেবে প্রকাশ করে। আবার প্রকৃতি প্রতিসাম্য (symmetry) পছন্দ করে। যেহেতু বিকিরণের দ্বৈত প্রকৃতি রয়েছে তাই বস্তুরও দ্বৈত প্রকৃতি থাকা সম্ভব। এ চিন্তা মাথায় নিয়ে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী লুইস দ্য ব্রগলি প্রস্তাব করেন যে, প্রত্যেক বস্তুরও দ্বৈত প্রকৃতি রয়েছে—একটি কণা প্রকৃতি এবং অপরটি তরঙ্গ প্রকৃতি । প্রত্যেকটি চলমান কণার সাথে একটি তরঙ্গ যুক্ত থাকে। প্রস্তাবকের নাম অনুসারে এই তরঙ্গকে দ্য ব্রগলি বস্তু তরঙ্গ বলা হয়। এই তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে দ্য ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে ।
আমরা জানি যে, f কম্পাঙ্কবিশিষ্ট ফোটনের শক্তি E হলে,
E = hf
:-f=E/h... (8.46)
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব থেকে পাওয়া যায়,
E = pc
বা, hf = pc
বা, p = hf/c
বা, p=h/
:- = h/p… (8.47)
(8.46) ও (8.47) সমীকরণ দুটোতে fও এর যথাযথ অর্থ তখনই প্রকাশ পায় যখন তাদের দ্বারা কোনো তরঙ্গকে বর্ণনা করা হয় । সমীকরণ দুটো থেকে এটাও স্পষ্ট বোঝা যায় যে, h, E ও p কোনো কণার সাথে সম্পর্কযুক্ত। সমীকরণ দুটো থেকে আরো বোঝা যায় যে, তাড়িতচৌম্বক বিকিরণের তরঙ্গকণা দ্বৈতরূপ (wave particle duality) আছে। এখানে কোয়ান্টাম তত্ত্বের ধ্রুবরাশি, প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক । এটাও এই বিকিরণের তরঙ্গ প্রকৃতির এবং কণা প্রকৃতির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এ থেকে আমরা বলতে পারি যে,
দ্য ব্রগলি অনুমান করেন যে (8.46 ) ও (8.47) নং সমীকরণ ইলেকট্রনের বেলায় যেমন প্রযোজ্য তেমনি সঠিক বিকিরণের বেলায়ও। এই অনুমান যদিও আশ্চর্যজনক তথাপি ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিসন এবং গারমারের পরীক্ষায় এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।
দ্য ব্রগলির সম্পর্ক অনুসারে p ভরবেগবিশিষ্ট কোনো বস্তু কণার তরঙ্গদৈর্ঘ্য হবে,
= h/p =h/mv… (8.48)
এখানে h = প্ল্যাঙ্কের ধ্রুব, m = কণার ভর, v = কণার বেগ।
আরও দেখুন...